পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম

আপনি কি জানেন না জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম নিয়ম সম্পর্কে। আপনার হাতে যে প্রিন্ট করা জন্ম নিবন্ধন রয়েছে সেটা কি অনলাইনে নেই? তাহলে জেনে নিন আজকের এই নিবন্ধ থেকে কিভাবে হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করাবেন।

এই ডিজিটাল যুগে আপনার জন্ম নিবন্ধনটি যদি ডিজিটাল না হয় তাহলে কেমন একটা বিষয়। এমনকি আপনার ছেলে মেয়েদের এন আইডি কার্ড করানোর সময় লাগবে আপনার অনলাইন জন্ম সনদ।

কম বেশি সকলেই জানি, আমরা আগেরকার সময় হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করতাম। কিন্তু দেশটা এখন ডিজিটাল হওয়ায় এগুলো এখন ব্যবহার হচ্ছে না।

তাই যে সমস্ত লোকেরা আগে জন্ম নিবন্ধন করিয়েছেন যেগুলো কিনা হাতের লেখা ছিল। তারা বর্তমানে ডিজিটাল সনদ পেয়েছেন অনেকেই, যেটা কিনা সরকার কর্তৃক আমাদেরকে প্রদান করা হয়েছে।

আবার অনেক এমন লোক আছেন যারা এখনো পর্যন্ত নিজের হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন নিয়েই পড়ে আছেন। হয়তো কোন কারনেই ভুলবশত তাদের আইডি কার্ড অনলাইন করা হয় নাই। তাই আজকের এই নিবন্ধে জানাতে যাচ্ছি, জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।

গুরুত্বপূর্ণ লিংক – জন্ম নিবন্ধন আবেদন করুন | birth certificate application

আজকের এই ব্লগটিতে আমি স্টেপ বাই স্টেপ এবং প্রয়োজন এর কথা বলেছি। আপনাকে কী করতে হবে, কিভাবে আপনার জন্ম সনদটা অনলাইন করাবেন এ বিষয়টি নিয়ে।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করা কেন প্রয়োজন?

অফিস আদালত কিংবা শিক্ষাঙ্গন থেকে শুরু করে প্রায়ই বড় বড় কার্যক্রমে এখন আমাদের প্রয়োজন জন্ম সনদ। দৈনন্দিন জীবনে বর্তমান সময়ে আমাদের জন্ম নিবন্ধন একটা বাধ্যতামূলক নথি।

ছেলে মেয়ের আইডি কার্ড থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজে এখন প্রয়োজন জন্ম সনদ। যেহেতু এটা সম্পূর্ণরূপ আপনার জাতীয়তা প্রাথমিকভাবে নির্ভর করবে যখন আইডি কার্ড হবে না। তাই আপনার এটা অবশ্যই অনলাইনে থাকা প্রয়োজন।

যদি আপনার এমন হয়ে থাকে যে, জন্ম নিবন্ধন আছে ঠিক আছে কিন্তু সেটা অনলাইন করা নেই তাহলে কোন কাজে আসবে না। কেননা এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে প্রায় আমাদের সবগুলো নথি যেমন এনআইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট সহ যাবতীয় ইনফরমেশন অনলাইনে পাওয়া যায়।

পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে যা যা প্রয়োজন

জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে না থাকা মানে, আপনার জন্ম নিবন্ধন কার্যকর নয় অর্থাৎ সেটা কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না। যদিওবা প্রথম দিকে হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন এভেইলেবল ছিল এবং সেটা কার্যকরও ছিল। তবে ২০১০ সালের পর থেকে হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন করুন ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধনের রূপান্তরিত করা হয়।

এরপর থেকেই জন্ম নিবন্ধন কোন কাজে ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই সেটা ডিজিটাল করতে হবে বা অনলাইনে থাকতে হবে। তবে সেটা আপনি অনলাইন যাচাইয়ের মাধ্যমে দেখে নিতে পারবেন। তাই অবশ্যই আপনার হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করতে নতুনভাবে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন নিচে দেওয়া হল:-

  • ব্যক্তির নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান, জাতীয়তা, ধর্ম, লিঙ্গ, বর্তমান ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, ইমেল ঠিকানা ইত্যাদি।
  • আবেদনকারীর মোবাইল নাম্বার এবং ইমেইল ঠিকানা
  • অনলাইনে আবেদন করতে আবেদনপত্র প্রিন্ট করে নেওয়া লাগবে

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম

আপনার হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন যদি অনলাইন সার্ভারে পাওয়া না যায়, তাহলে সর্বপ্রথম এটা নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার জন্ম নিবন্ধন নাম্বারটি ১৭ ডিজিটের কিনা। সেই সাথে এটাও দেখে নিতে হবে যে, এই ১৭ ডিজিটের প্রথম চার ডিজিট আপনার জন্ম সাল কিনা।

সবগুলো ঠিকঠাক থাকা সত্ত্বেও যদি দেখতে পান যে, আপনার জন্ম নিবন্ধন কি অনলাইন ডাটাবেজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে আপনাকে bdris.gov.bd এই ওয়েবসাইট থেকে নতুন জন্ম সনদের আবেদন করতে হবে।

আর আপনার জন্ম নিবন্ধন নাম্বারটা যদি ১৬ ডিজিটাল হয় তাহলে হয়তো তার কারণে আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে ১৬ ডিজিট থেকে জন্ম নিবন্ধন নাম্বার ১৭ ডিজিটে রূপান্তর করতে হবে।

এখন পুনরায় আপনার জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং জন্ম তারিখ দিয়ে বার্থ সার্টিফিকেট যাচাই করে দেখুন সেটা অনলাইনে আছে কিনা। যদি অনলাইনে পাওয়া যায় তাহলে পূনরায় নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে হবে না বরং জন্ম নিবন্ধন ইংরেজির জন্য আবেদন করতে হবে।

তবে যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন বাংলা ইংরেজি উভয়টা করা থাকে তাহলে পরবর্তীতে আর কিছুই করতে হবে। তবে আপনার জন্ম নিবন্ধন যদি কোন ভুল থাকে তাহলে অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে নেয়ার চেষ্টা।

আপনার জন্ম যদি ২০০০ সাল বা তার পূর্ব হয়ে থাকে তাহলে জন্ম নিবন্ধন করার সময় মা বাবার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন থাকা বা থাকার প্রয়োজন নেই। জন্মদিন করার সময় জাস্ট মা-বাবার নাম লিখে দিলেই চলবে।

আমাদের বয়স অনেক বেশি হয়ে গেছে কিন্তু জন্ম নিবন্ধন করা নেই। আপনি যদি এমন হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই খুব তাড়াতাড়ি নতুন জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করে ফেলুন।

পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করে ফেলুন

কোনভাবে যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে নাই কেন এ বিষয়টা জানতে না পারেন। তাহলে অবশ্যই সেটা নতুন ভাবে আবেদন করতে হবে জন্ম নিবন্ধনের জন্য।

নিচে কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় এবং অনলাইন করার ধাপ তুলে দেওয়া হল সেগুলো আপনারা চাইলে ফলো করতে পারেন। জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে করতে পারেন নিম্নলিখিত স্টেপগুলো অনুসরণ করেঃ

  1. ইন্টারনেট সংযোগ: আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে করতে প্রথমে আপনার কাছে একটি সক্ষম ইন্টারনেট সংযোগ থাকা আবশ্যক। এটি সংগঠিত ও দ্রুত প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ হতে পারে না যদি আপনার সংযোগ দীর্ঘকাল ব্যাবহার করা না যায় বা নিশ্চিত করা হয় যে সংযোগটি স্থায়ী এবং স্থির।
  2. জন্ম নিবন্ধনের সার্টিফিকেট: জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে করতে প্রথমে আপনার জন্ম নিবন্ধনের সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। আপনি এই সার্টিফিকেটটি পেতে পারেন নিম্নলিখিত উপায়ের মধ্যে যে কোনটি ব্যবহার করেঃ
    • অফিসিয়াল জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট: আপনার অফিসিয়াল জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেটটি পেতে পারেন আপনার জন্ম নিবন্ধন অফিস থেকে। অফিসে আপনার আইডি প্রমাণ করার জন্য আবেদন করতে পারেন এবং সার্টিফিকেটটি পেতে হলে নিবন্ধন ফি প্রদান করতে হবে।
    • ওয়েবসাইটের মাধ্যমে: কিছু দেশের জন্ম নিবন্ধন বিভাগ বা সরকারি পোর্টালে আপনি অনলাইনে একটি আবেদন করতে পারেন। আপনাকে প্রয়োজনীয় ফরম পূরণ করতে হবে এবং সার্টিফিকেটটি ডাউনলোড করতে পারেন।
  3. অনলাইন আবেদন ফরম: যখন আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে করতে যাচ্ছেন, আপনাকে অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। এই ফরমে আপনাকে নিজের সম্পর্কে তথ্য, পিতা এবং মাতার তথ্য, জন্ম তারিখ এবং জন্ম স্থানের মতো তথ্য প্রদান করতে হবে। আপনার তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করা জরুরি।
  4. প্রমাণপত্র: জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে করতে প্রমাণপত্রগুলি প্রদান করতে হবে। প্রমাণপত্রের তালিকা সাধারণত একটি পাসপোর্ট সাইজ ছবি, পিতার এবং মাতার পরিচয়পত্র, অফিসিয়াল জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট ইত্যাদি অন্যান্য প্রমাণপত্রগুলি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
  5. ফি পরিশোধ: অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করতে হলে আপনাকে সম্পূর্ণ ফি পরিশোধ করতে হবে। ফি পরিশোধের জন্য অনলাইন পেমেন্ট মেথডগুলি ব্যবহার করা হতে পারে, যেমন ক্রেডিট‌ বা ডেবিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ইত্যাদি।

এই ধাপগুলি অনুসরণ করে আপনি জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে সম্পন্ন করতে পারবেন। তবে এখানে অনেকগুলো মিসটেকও হতে পারে তাই অবশ্যই ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা পৌরসভা কার্যালয়ে যাচাই-বাছাই করে দেখুন।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে পাওয়া না গেলে করণীয় কি

আপনার জন্ম নিবন্ধন যদি বাংলাদেশ অনলাইন ডাটাবেজে পাবোনা যায় তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে পাওয়া না যাওয়ার কারণ খুঁজতে হবে। এমন হতে পারে যে, আপনার জন্ম নিবন্ধন আগে হাতের লেখা ছিল।

কিন্তু পরবর্তীতে যখন সেগুলো অনলাইন ডাটা বেছে আনা হই হয়তো ভুলবশত আপনারটা অনলাইন করা হয়নি। এমনও হতে পারে আপনার ১৬ ডিজিট এর জন্ম নিবন্ধন নাম্বার হওয়ায় আপনি সেটা যাচাই করতে পারছেন না কিংবা অনলাইন ডাটা বেসে পাচ্ছেন না।

তাই যদি ১৭ ডিজিটের হয় অবশেষে ১৭ ডিজিটাল রুপান্তরিত করবেন। আর এটাও খেয়াল রাখবেন যে, আপনার জন্ম নিবন্ধনের ১৭ ডিজিটের প্রথম ৪ ডিজিট আপনার জন্ম সাল কিনা।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় – জন্ম নিবন্ধন আবেদনের বর্তমান অবস্থা

আর আপনি যদি এরকম কোন কারণ খুঁজে না পান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নতুন জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করতে হবে। আপনি আবেদনটা দুই ভাবে করতে পারেন।

একটা হচ্ছে সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভাতে যোগাযোগ করে। তাদেরকে গিয়ে বলবেন যে আমার জন্ম নিবন্ধন এখনো হয় নাই করাতে চাই। দায়িত্বরত কর্মকর্তা আপনাকে জানিয়ে দিবেন কিভাবে কি করতে হবে।

দ্বিতীয়ত হচ্ছে আপনি চাইলে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করেন নির্দিষ্ট একটা নিয়ম রয়েছে সেটা জানতে আমার জন্ম নিবন্ধনে আবেদন লেখাটি পড়ে আসুন।


FAQ

জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে পাওয়া না যাওয়ার কারণ কি হতে পারে?

বিভিন্ন কারণে আমাদের জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে থাকে না যেমন হয়তো আমাদের জন্ম নিবন্ধন হাতের লেখা ছিল কিন্তু সেটা অনলাইন করার সময় ভুলে থেকে গিয়েছিল। তাছাড়া আপনার জন্ম নিবন্ধনের যে নাম্বারটা রয়েছে সেটা যদি ১৬ ডিজিটের হয় তাহলেও অনলাইনে খুঁজে পাওয়া যাবে না আরো বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে।

জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল না হলে কি কোন অসুবিধা আছে?

হ্যাঁ অবশ্যই, আপনার জন্ম নিবন্ধন যদি ডিজিটাল কিংবা অনলাইনে না থাকে তাহলে আপনি অনেকগুলো সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। এমনকি আপনি এন আইডি কার্ড করার সময় প্রয়োজন পড়বে ডিজিটাল জন্ম সনদ বা অনলাইন জন্ম সনদের, ছেলেমেয়েদের জন্ম নিবন্ধন করাতেও লাগে এখন মা-বাবার বার্থ সার্টিফিকেট।

যাচাইজন্ম নিবন্ধন যাচাই
সংশোধনbirth certificate correction
স্ট্যাটাসজন্ম নিবন্ধন আবেদনের বর্তমান অবস্থা
অনলাইন করার ওয়েবসাইটজন্ম নিবন্ধন অনলাইন করুন লিংক
পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করুন

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *